স্পোর্টস করেসপন্ডেন্ট:
সময়টা এখন তাওহিদ হৃদয়ের। দশম বিপিএলে ব্যাটহাতে নিয়মিত মুগ্ধতা ছড়িয়ে চলেছেন ২৩ বছর বয়সী তরুণ। হৃদয় এখন পর্যন্ত দশম বিপিএলের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক। ১৩ ইনিংস ব্যাটিং করে ৪০.৬৩ গড়ে করেছেন ৪৪৭ রান। স্ট্রাইকরেট ১৪৯.৪৯!
এরই মধ্যে একটা ইতিহাসও গড়ে ফেলেছেন হৃদয়। বিপিএলে এর আগে ১৪০ স্ট্রাইকরেটে কোনো বাংলাদেশি ব্যাটার এক আসরে ৪০০-এর বেশি রান করতে পারেননি। হৃদয় এবার সেটা করে দেখিয়েছেন।
গতকাল কোয়ালিফায়ার ম্যাচে রংপুর রাইডার্সের বিপক্ষে ৬৪ রানের বিধ্বংসী একটা ইনিংস খেলেছেন হৃদয়। কুমিল্লার জয়ে যা বড় অবদান রেখেছে। এর আগে সিলেটে দুর্দান্ত ঢাকার বিপক্ষে অপরাজিত বিধ্বংসী এক সেঞ্চুরি (১০৮) করেছিলেন। বিপিএলের প্রথম সেঞ্চুরি ছিল সেটা। সেদিন বাকি ব্যাটারদের ব্যর্থতার মধ্যে দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরি করে দলকে প্রায় একাই জিতিয়েছিলেন হৃদয়। চট্টগ্রামে খুলনা টাইগার্সের বিপক্ষে খেলেছিলেন অপরাজিত ৯১ রানের অসাধারণ এক ইনিংস। এই তিন দিনই ম্যাচ জিতেছে কুমিল্লা।
গতকাল কোয়ালিফায়ার ম্যাচে রংপুর রাইডার্সের ১৮৫ রানের জবাব দিতে নেমে শুরুতেই এক উইকেট হারিয়ে ফেলা কুমিল্লার হয়ে দ্বিতীয় উইকেটে ১৪৩ রানের জুটি গড়েছিলেন তাওহিদ হৃদয় ও লিটন দাস। ম্যাচ শেষে লিটন বলছিলেন, ক্যারিয়ারে যতো ইনিংস খেলেছি, যতো পার্টনারের সঙ্গে ব্যাটিং করেছি তার মধ্যে হৃদয়ের সঙ্গে পার্টনারশিপটাই সেরা। পার্টনার হিসেবে যত জনের সঙ্গে ব্যাটিং করেছি তাদের মধ্যে গতকালের হৃদয়ই সেরা।
কোন বিষয়টা হৃদয়কে অন্যদের চেয়ে এগিয়ে রাখে, এমন প্রশ্নের জবাবে লিটন বলেছেন, হৃদয় ভালো বলেও ছয় মারতে পারে। লিটনের ব্যাখ্যাটা ছিল এমন, ‘সে ভালো বলে ছয় মারতে পারে, যেটা আমাদের দেশে খুব কম ব্যাটসম্যান পারে। স্বাভাবিক, যেকোনো বোলার যে সংস্করণেই হোক না কেন, উইকেটেই বল করবে। আর সে উইকেটের বলটাই খুব বেশি ভালো মারে। এটা সে নয়, যারা বিশ্ব ক্রিকেটে সফল ব্যাটসম্যান, সবাই স্টাম্পের বল ভালো খেলে। আমার মনে হয়, এটা তার সবচেয়ে ভালো প্লাস পয়েন্ট। দেখতে ছোট হলেও বড় বড় ছয় মারতে পারে।’
‘যেটুকু সামনে থেকে দেখি, আমার মনে হয়, সে ক্রিকেট নিয়ে অনেক চিন্তা করে। অনেক হার্ড ওয়ার্কার। সাধারণত খুব কম ক্রিকেটার এত ঘন ঘন জিমে যায়। কোনো না কোনো কাজ করতেই থাকে। এটা তার ভালো একটা দিক।’- যোগ করেছেন লিটন।
গত বছর সিলেট স্ট্রাইকার্সের হয়ে বিপিএল মাতিয়েছিলেন হৃদয়। রান করছিলেন চারশর বেশি। সেই পারফরম্যান্সই তার জন্য জাতীয় দলে দরজা খুলে দিয়েছিল। শোনা যায়, এবার সিলেট থেকে তাকে উড়িয়ে আনতে এক কোটির বেশি টাকা খরচ করতে হয়েছে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সকে। তবে বিনিয়োগটা যে ঠিক জায়গাতেই হয়েছে সেটা ইতোমধ্যেই পরিস্কার।
কুমিল্লার কোচ সালাউদ্দিন কয়েক দিন আগে বলেছিলেনও সেই কথা, ‘আমার মনে হয়, আমাদের বিনিয়োগটা ভালো ছিল। আমরা ঠিক খেলোয়াড়কে নিয়েছি। দুটি ম্যাচ একাই জিতিয়েছে। সে যেভাবে খেলে, স্ট্রাইক রেট বলেন আর যেটাই বলেন, তা দিয়ে দলটাকে এগিয়ে নিয়ে আসে। আমাদের বিনিয়োগটা খুব ভালো হয়েছে।’
এমআই