তাসনীম সিদ্দিকাঃ
কৃষি প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থীদের ইন্টার্নশিপ নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে প্রতিবাদ করেছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) শিক্ষার্থীরা। প্রতিবাদস্বরূপ শিক্ষার্থীরা অনুষদের ডিন কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে।
বুধবার (০৭ মে) বেলা সাড়ে বারোটার দিকে অনুষদে প্রবেশের ফটকে ও ডিন কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা।
অভিযোগ জানিয়ে শিক্ষার্থীরা জানান, চর্তুথ বর্ষের ২য় সেমিস্টারের সমাপনী পরীক্ষার ফরম ফিল আপ সম্পন্ন হয়ে গেলেও ইন্টার্নশিপ নিয়ে এখনও কিছুই জানানো হয়নি তাদের। এ বিষয়ে বিস্তারিত কোনো ধারণা বা প্রাতিষ্ঠানিক কোনো নোটিশ এখনও দেওয়া হয় নি বলে অভিযোগ করছেন শিক্ষার্থীরা।
তাদের দাবি, কোর্সের সাথে যখন ইন্টার্নিশিপ যুক্ত করা হয়েছে তখন আমাদেরকে সঠিক নিয়মে এই ইন্টার্নশিপের সকল সুবিধা দিতে হবে।
কৃষি প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থীরা জানান, এবছরই প্রথম কৃষি প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদে ইন্টার্নশিপ শুরু হতে চলেছে। আমাদের সাথে সাথে অন্যান্য অনুষদেও এবছর প্রথম ইন্টার্নশিপ শুরু হয়েছে। ওইসকল অনুষদে ইন্টার্নশিপের উদ্বোধনী, বিস্তারিত সময়সূচি এবং সংশ্লিষ্ট ভাতাসহ সকল বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হয়েছে। শুধুমাত্র কৃষি প্রকৌশল অনুষদের শিক্ষার্থীরাই ইন্টার্নশিপের বিষয়ে কোনো তথ্য জানে না। তাদেরকে কেন বঞ্চিত করে রাখা হয়েছে এ বিষয়ে কোনো সদুত্তর দিতে পারেন নি অনুষদের শিক্ষকবৃন্দ।
তারা আরও জানান, চতুর্থ বর্ষের ২য় সেমিস্টারের সমাপনী পরীক্ষায় অন্যান্য কোর্সের সাথে ৫ ক্রেডিটের ইন্টার্নশিপ যুক্ত করা হয়েছে। অন্যদিকে অনুষদীয় ডিন অধ্যাপক ড. মো. জয়নাল আবেদীনের সাথে এ বিষয়ে একাধিকবার আলোচনা করে হলেও কোনো তথ্য পাওয়া যায় নি। অন্যান্য অনুষদ যেখানে ইন্টার্নশিপ সংশ্লিষ্ট ভাতার ব্যবস্থা করতে পেরেছে সেখানে এই অনুষদের শিক্ষার্থীদের জন্য ভাতার ব্যবস্থা করা যাচ্ছে না বলেও জানিয়েছেন অনুষদের ডিন। চাকরির ক্ষেত্রে ইন্টার্নশিপের অভিজ্ঞতা অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। গুরুত্বপূর্ণ এই বিষয়টিকে নিয়ে এত গড়িমসি করায় ক্ষুদ্ধ হয়ে উঠেছেন শিক্ষার্থীরা। এরই ধারাবাহিকতায় আজ ডিন কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়েছেন তারা।
তালা দেওয়ায় অনুষদে আটকা পড়েছেন অন্যান্য শিক্ষকবৃন্দও এবং ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ হয়ে আছে অন্যান্য বর্ষের শিক্ষার্থীদের । দুপুর দেড়টা থেকে তৃতীয় বর্ষের পরীক্ষা হওয়ার কথা। তালা না খোলা হলে পরীক্ষায় বসতে পারবেন না তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীরা। ফলে শঙ্কায় আছেন তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীরাও।
এ বিষয়ে কৃষি প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. জয়নাল আবেদীন বলেন, 'অন্যান্য অনুষদ তিন বছর আগে ইন্টার্নশিপের ভাতা এবং অন্যান্য বিষয় পাশ করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে চিঠি দিয়েছে। আমরা এবছর চিঠি দিয়েছি এবং চিঠিতে এবছরের ভাতার বিষয়টি নিয়ে লিখেছিলাম। বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় পাশ হয়েছে এবং বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি) আগামী বছর থেকে সংশ্লিষ্ট ভাতার ব্যবস্থা করবে বলে জানিয়েছে। ইউজিসি এবছর ইন্টার্নিশিপের জন্য ভাতা দিচ্ছে না। এখন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বা ইউজিসির পক্ষ থেকে কোনো তথ্য না আসলে আমি শিক্ষার্থীদের এ বিষয়ে কিছু জানাতে পারছি না। বিষয়টি পুরোটাই তাদের হাতে।'