ড. মাহবুবুল এইচ সিদ্দিকি
ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট প্রচন্ড করোনা আতঙ্ককে ইন্টারন্যাশনাল স্ফিয়ারে আবারো ফিরিয়ে এনেছে। এতে কিছুটা লেজিটিমেট কারন যেমন আছে, তেমনি ঘরপোড়া গরুর মত সিঁদুরে মেঘ দেখেই ঘাবড়ে যাওয়ার ব্যাপারও আছে। চলুন দেখে নেয়া যাক।
করোনার অরিজিনাল স্ট্রেইনের সাথে ওমিক্রনের মূল পার্থক্য হচ্ছে স্পাইক প্রোটিনে একসাথে অনেকগুলো মিউটেশন। এগুলোর কারনে ভ্যাক্সিন বা পাস্ট-ইনফেকশন থেকে আমাদের দেহে তৈরি হওয়া এন্টিবডি দিয়ে ওমিক্রনের ইনফেকশন ঠেকানো কঠিন হতে পারে। যার কারনে বেশী সংখ্যক মানুষ ইনফেকটেড হওয়ার সম্ভাবনা আছে। কিন্তু ইনফেকশন হলেই কি সব হয়ে গেল?
ওমিক্রনে ইনফেকশন হলেই সেটা আগের তুলনায় সিরিয়াস হবে বা বেশী হারে মানুষ মারা যাবে, আফ্রিকার আক্রান্ত মানুষদের মধ্যে এমন কোন প্রমাণ তো বটেই, বরং স্ট্রং ইন্ডিকেশনও এখন পর্যন্ত পাওায় যায়নি। তাই, অতিরিক্ত আতঙ্কিত হওয়ার কোন কারন এখনি নেই।
ইন ফ্যাক্ট, ওমিক্রনের বিরুদ্ধে এক্সিস্টিং এন্টিবডি দিয়ে খুব প্রোটেকশন যদি পাওয়া না-ও যায়, আমাদের দেহের T-সেল মেডিয়েটেড ইমিউনিটি, যা স্পাইক প্রোটিন ছাড়াও করোনার অন্য অনেক এন্টিজেনের বিরুদ্ধে ইফেক্টিভলি কাজ করে, সেটা আগের মতই প্রোটেকশন দিতে পারা খুবই এক্সপেক্টেড হবে। তাই, সিরিয়াস ইলনেস বা ডেথ রেট বেশী হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। কিন্তু আমাদের দেশে কি হতে পারে?
আমাদের দেশের ম্যাক্সিমাম মানুষের মধ্যে করোনার ইমিউনিটি হয়েছে মূলত বেটা এবং ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের ব্যাপক ন্যাচারাল ইনফেকশনের কারনে, যা ভ্যাক্সিনেশনের মাধ্যমে আরও জোরদার হয়েছে বলা যায়। এমনকি অনেকগুলো ফ্যাক্টরের কারনে এখন পর্যন্ত সবচাইতে ডেঞ্জারাস ডেল্টাও খুব বেশী ক্ষতি করতে পারেনি। তাই, আমাদের দেশে ওমিক্রনের ইনফেকশন হলেও তা থেকে অনেক বেশী ক্ষতির সম্ভাবনা কম থাকবে, এমন আশা করাই যায়। তাহলে আমাদের কি কিছুই হবেনা?
ওয়েল, ওমিক্রনের কারনে একজন মানুষও যদি বেশী মারা যায়, তাহলে সেই মানুষটা কি আপনি হতে চাইবেন? তাই, ব্যাক্তি-পর্যায়ে সতর্কতা সবসময় এপ্রিশিয়েবল। আর সরকার এই ভ্যারিয়েন্টকে ঠেকানোর জন্য পোর্ট-গুলোতে সার্ভেইল্যান্স বাড়াক, যদি দু-একজন রোগী পাওয়াও যায়, স্ট্রং কন্টাক্ট-ট্রেসিং করুক। বাকিটা সচেতনতা দিয়ে আমরা ম্যানেজ করে নিব, ইনশাল্লাহ। ঠিক না বেঠিক??
লেখক ও গবেষক: ড. মাহবুবুল এইচ সিদ্দিকি
সময় জার্নাল/আরইউ